মুন্সীগঞ্জে দিঘিরপাড় হাটে বড় ইলিশের আড়ালে দেদার বিক্রি হচ্ছে জাটকা। প্রতিদিন এ হাটে মণকে মণ জাটকা বিক্রির অভিযোগ থাকলেও নীরব ভূমিকায় প্রশাসন।
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার পদ্মাপারের দিঘিরপাড় মাছের হাট। ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড়ে চলে জমজমাট বেচাকেনা। এ হাটে বড় ইলিশের আড়ালে দেদার বিক্রি হচ্ছে জাটকা।
তবে সময় সংবাদের ক্যামেরা দেখে জাটকা লুকানোর চেষ্টা করেন ব্যবসায়ীরা। সটকে পড়েন আড়তদারও। আরেক আড়তদার বাধা দেন ছবি তুলতে।
তাদের দাবি, হাটে সব বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। এখানে জাটকা বিক্রি করা হয় না।
এদিকে প্রতিদিন এই হাটে মণকে মণ জাটকা বিক্রির অভিযোগ থাকলেও প্রশাসন নীরব রয়েছে। আর এ নিয়ে আড়তদার সমিতির নেতারাও দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
মুন্সীগঞ্জের দিঘিরপাড় মৎস্য আড়তের সাধারণ সম্পাদক আলী আশরাফ কুব্বাত মোল্লা বলেন, কোনো আড়তদার হাটে জাটকা বিক্রি করলে ব্যবসায়ীর পক্ষে হাট সমিতি কোনো প্রকার তদবির করবে না।
আর জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি, জাটকা শিকার ও বিক্রি বন্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।
মুন্সীগঞ্জের জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমাশুল করিম বলেন, জাটকা রক্ষা ও কারেন্টজাল বন্ধ করা গেলে জেলার দুই হাজার মেট্রিক টন মাছের ঘাটতি মিটিয়ে উদ্বৃত্ত থাকবে।
পদ্মার তীরঘেঁষা এই হাটের ৪৪ আড়তে বিক্রি হয় ফর্মালিনমুক্ত কার্ফু, আইড়, পাঙাশ, রুই, বোয়ালসহ হরেক রকম দেশীয় তাজা মাছ।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা যায়, বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। আর দেশি কই ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, শিং ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, রিঠা ৮০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, চিতল ৭০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, নদীর পাঙাশ ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর রুই বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকায়।
এ ছাড়া আইড় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা, নলা ১৬০ থেকে ৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৪০ থেকে ২০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৭০০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা ও গজার মাছ ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
১৭ লাখ মানুষের মুন্সীগঞ্জে প্রতিবছর মাছের চাহিদা ১১ হাজার মেট্রিক টন। জেলায় গত এক বছরে ২ হাজার ১৯৫ টন ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। আর এর বড় একটি অংশ বিক্রি হচ্ছে এই ইলিশের হাটে।
সময় সংবাদ
Leave a Reply