শ্রীনগরে সালিশ বৈঠকে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা

শ্রীনগর উপজেলার কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ সভাপতিসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শনিবার রাতে শ্রীনগর থানায় মামলাটি রেকর্ড করা হয়। এরআগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ জন আহত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, আদালতে মামলা চলমান থাকার পরও কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু তাদেরকে কৌশলে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেন। পরে সালিশ মীমাংসা শেষে তার ইন্ধনেই আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১লা ফেব্রুয়ারি পূর্বশত্রুতার জেরে কুকুটিয়া ইউনিয়নের টুনিয়া মান্দ্রা গ্রামের ফজল হক (৭২) ও তার স্ত্রী জবেদা বেগম (৬৫)কে একই গ্রামের নুরুল বেপারী (৫৫) তার লোকজন নিয়ে মারধর করে। এ বিষয়ে গত ৪ঠা ফেব্রুয়ারি শ্রীনগর থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করা হয়। পরবর্তীতে পুনরায় নুরুল বেপারী গত ৮ই ফেব্রুয়ারি ফজল হককে হুমকি দিলে সে শ্রীনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। বৃহস্পতিবার বিকালে কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য তপন হোসেন ফজল হকের পরিবারকে সালিশ মীমাংসার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেয়। সেখানে চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলা শেষ হলে ফজল হক তার স্ত্রী জবেদা বেগম ও ছেলে জাবেদে (৩২)’র উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এতে জবেদা বেগমের মাথায় ৬টি সেলাই দেয়া হয়। এই ঘটনায় ফলজ হকের মেয়ে জহুরা আক্তার মুক্তা বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ অভিযোগটি আমলে নিয়ে রোববার রাতে তা মামলা হিসেবে আমলে নেন। মামলায় আসামি করা হয়েছে- কুকুটিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল করিম রেজা, সাবেক বিএনপি নেতা সিরাজ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সাজু, রিয়াজ, শামীম, ফিরোজ, জাহাঙ্গীর বেপারী ও নুরুল বেপারীসহ অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজনকে। কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য তপন হোসেন বলেন, ওদের দুই গ্রুপের পুরনো মামলা ছিল সেটি সমাধানের জন্য চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু আমাকে তাদের ডেকে আনতে বললে আমি তাদের ডেকে নিয়ে আসি। কুকুটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রেজাউল করিম রেজা বলেন, ওই নারী খুব খারাপ। চেয়ারম্যান মীমাংসার জন্য ডেকে আনলে সে মীমাংসায় রাজি হয়নি। আমি ও চেয়ারম্যান চলে আসার পর এটা নিয়ে কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ঝামেলা বাঁধে। কুকুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল হোসেন বাবু বলেন, আজকে সালিশ ছিল না। তবে তাদের সালিশের বিষয় নিয়ে কথা বলতেছিলাম। কথা শেষ করে আমি গাড়িতে উঠে যাওয়ার পরে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। শ্রীনগর থানার অফিসার ইনাচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

মানবজমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.