হঠাৎ এসে স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ

আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ কিংবা দলের অন্য কোনো অঙ্গ সংগঠনের সঙ্গে কোনো সময় জড়িত না থেকেও মুন্সিগঞ্জ সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আরিফ হোসাইন সুমন। তার সঙ্গে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ অঙ্গ সংগঠনের নির্বাচনি মাঠের সাধারণ জনগণের তেমন কোনো সম্পৃক্ততা না থাকলেও শুধু অর্থ- বিত্তের জোর ও কেন্দ্রীয় এক নেতার তদবিরে ভরসা করে দলের সভাপতির পদ পেতে ছোটাছুটি করছেন বলে মনে করেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। এতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সভাপতি পদ প্রার্থী নেতারাও। জানা গেছে, আসন্ন সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে

স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন ৮ থেকে ১০ জন। তাঁরা প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে পদ পাবেন বলে জোর আশাবাদী। কিন্তু এসব পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের সঙ্গে দল ও এলাকার মানুষের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে দলের সাধারণ নেতাকর্মীরা মনে করেন। এর মধ্যে সভাপতি প্রার্থী আরিফ হোসাইন সুমন আছেন যাঁরা কোনোদিন রাজনীতি বা এলাকার সমাজসেবামূলক কাজেও সম্পৃক্ত ছিলেন না। কিন্তু তিনি শুধু টাকা ও এক কেন্দ্রীয় নেতার তদবিরের জোরে হাতিয়ে নিতে চান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি পদ।

দলীয় সূত্রে জানা যায় , আগামী ২০ মার্চ (সোমবার) সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকরীগ সন্মেলনে ১০ জন প্রার্থী তাদের জীবন বৃত্তান্ত জামা দিয়েছেন। এদের মধ্যে যারা দুর্দিনে আন্দোলন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ডাকে সারা দিয়ে পাশে ছিলেন তাদের মধ্যে থেকে নেতা নির্বাচন করা হবে। কোন নেতার তদবিরে কোন পদ পদবী দেয়া হবে না।

বর্তমানে সিরাজদিখানে সম্ভাব্য স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে তাঁরা হলেন মোঃ মহসিন, মহসিন রেজা, আহসানউল্লাহ রয়েল, আরিফ হোসাইন সুমন, সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্ধী মো. ওয়াসিম, মো. সাখাওয়াত হোসেন সৈকত, শাহ আরিফ খান, শাহলম আসাদ, আইনুল ইসলাম নোমান এদের মধ্যে আরিফ হোসাইন সুমন সভাপতি প্রার্থী ও কয়েকজন সাধারণ সম্পাদক নিজেদের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে কয়েকমাস আগে থেকে প্রচার শুরু করলেও আরিফ হোসাইন সুমনের নেই কোনো রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা জনসম্পৃক্ততা। এর পরও তার পদ পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করায় এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের টিকিট চাওয়ায় তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে এ নিয়ে বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিরাজদিখানে কোনো সময় কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত না থেকেও বেশ কজন স¤প্রতি কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারস্থ হচ্ছেন । তাদের অন্যতম আরিফ হোসাইন সুমন। তিনি সুদুর আমেরিকা প্রবাসী। বিগত ২৪ বছরে রাজনীতির সঙ্গে কোনো জনসম্পৃক্ততা কখনো চোখে পড়েনি। স্বেচ্ছাসেবকলীগের কোনো পদ-পদবিতেও নেই তিনি।

কোন আন্দোলন সংগ্রাম না করলেও তবু তিনি সভাপতি হতে চান। এ প্রসঙ্গে সিরাজদিখান উপজেলা সাবেক স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম চৌধুরী চঞ্চল বলেন, স্বেচ্ছাসেবকলীগ এমন দল নয় যে রাস্তা-ঘাট থেকে ধরে এনে কাউকে নেতা বানাতে হবে। আমি ১৫ বছর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছিলাম।

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাইনি। কিন্তু যাঁরা কোানোদিন কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না, রাজনীতির আশপাশেও ছিলেন না, তাদের অনেককে এখন দেখছি পদ প্রত্যাশী তারা। তৃণমূলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা নেই এমন কাউকে পদ দিলে আমরা মেনে নেবো না।

স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি পদ প্রার্থী মহসিন রেজা বলেন, এখন দলের সুসময়। তাই দুধের মাছিরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা কোনরকম ঘাত— প্রতিঘাত না পেরিয়েই পদ পেতে চান! তবে রাজনীতির সঙ্গে নেই এমন কাউকে দল পদ দেবে না বলেই মনে করছেন তিনি। সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকরীগের সাবেক সহ-সভাপতি কামাল হোসেন লাল বলেন, আমরা রাজনৈতিক মানুষ। সারাজীবন রাজনীতি করে গেছি। এখন দেখছি রাজনীতির সঙ্গে কোনোদিনও ছিলেন না এমন মানুষ স্ধেসঢ়;¦চ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হতে চাইছেন। এভাবে কেউ সভাপতি হলে দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা হতাশ হন।

জয়ন্ত ঘোষ,রেজাউল করিম রাজু,শামীম চৌধুরী চঞ্চল প্রমুখ তৃণমূলের সঙ্গে জনসম্পৃক্ত নেতাকেই স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতির পদ দেয়ার দাবি জানান। এ ব্যাপারে কথা বলতে সভাপতি পদপ্রত্যাশী আরিফ হোসাইন সুমনের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.