চরকেওয়ারে জরাজীর্ণ ভবনে আতঙ্ক নিয়ে চিকিৎসাসেবা

মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রেটি অযত্ন অবহেলায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৯৮১ সাল থেকে এ ভবনে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বেড়িয়ে আছে ছাদের বিমের রড। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেয়াল জমেছে শেওলা। খসে পড়ছে ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তরা। জরাজীর্ণ ভবন নিয়ে আতঙ্ক থাকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির চিকিৎসক ও কর্মীরা। সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, চার কক্ষবিশিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রটির জরাজীর্ণ ভবনে দেয়ালে ও ছাদে শেওলা জমে আছে। দেখে মনে হয় কোনো ভূতের বাড়ি। রোগীদের জন্য অপেক্ষমাণ কক্ষটির ছাদের পলেস্তারা খসে রড বের হয়ে আছে। দক্ষিণপাশের একটি কক্ষে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভাঙা আসবাবপত্র স্তূপ করে রাখা হয়েছে।

অন্য দু’টি কক্ষে দু’জন চিকিৎসক রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। তাদের সেবা দিতে এক জন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শক, একজন এমএলএসএস, একজন আয়ার পদ রয়েছে। ইউনিয়নের গজারিয়া কান্দি থেকে আসা মফিজ ভান্ডারী (৬০) বলেন, পুরান ভবনের অবস্থা বেশি ভালা না। চিকিৎসা নিতে ভিতরে যাইতে ডর লাগে।

চিকিৎসা নিতে আসা বাঘাইকান্দি গ্রামের সালেহা বেগম জানান, ভবনটি দেখলে ভয় মনে হয় কতো বছর ধরে জানি কাজ করে। এদিকে নতুন ভবনে ঢোকার মূল ফটকটি তালাবদ্ধ দেখা যায়। বাহির থেকে রং চাকচিক্যময় ভবনটি দেখা যাচ্ছিলো। তবে ভবনের কাজ নিয়ে অভিযোগ করেন স্থানীয় ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মীরা। এ ছাড়া নানা অনিয়মের কারণে নতুন ভবন উদ্বোধন হয়নি। তারা জানান, নতুন ভবনের কাজের মেয়াদ কয়েকবার শেষ হয়েছে। এর পরেও ঠিকাদার কাজ বুঝিয়ে দেয়নি। জলছাদের কাজে রড দেয়ার কথা ছিল। ঢালাইয়ের দিন যখন প্রকৌশলী কাজ পরিদর্শনে আসেন, তখন পর্যন্ত রড বিছানো ছিল। প্রকৌশলী যাওয়ার পর রড তুলে ঢালাই দেয় ঠিকাদারের লোকজন। এ ছাড়াও ভবনের চারদিকে মাটি, মূল সড়ক থেকে নতুন ভবন পর্যন্ত ১২০ ফুট রাস্তা করার কথা ছিল। সেটিও তারা সম্পূর্ণ করেননি।

অভিযোগের বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক সৈয়দ লামীম হাসান নিলয় বলেন, রড উঠিয়ে নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। সিডিও মোতাবেক যথাযথভাবে কাজ হয়েছে। মুন্সীগঞ্জ পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আমজাদ আলী দপ্তরী বলেন, কাজে কিছু অনিয়রে কথা শুনেছি। যেভাবে কাজ করার কথা ছিল, সেভাবে কাজ করা হয়নি। মুন্সীগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আবুল খায়ের সঙ্গ মুঠো ফোনে বারবার যোগাযোগর চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার গায়েত্রী বিশ্বাস বলেন, এ কাজের জন্য নতুন অর্থবছর ৩টি ভবনের জন্য অনুমোদন চেয়েছি। তারা দু’টি কাজের অনুমোদন দিয়েছে। একটা কাজ প্রায় শেষ কিন্তু ঠিকাদার হ্যান্ডওভার করছে না।

মানবজমিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.